চীনা বিক্ষোভকারীদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন
ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: বেইজিং-এর কঠোর শূন্য কোভিড নীতি পরিবর্তন করা হবে কি না এ ব্যাপারে প্রশাসন থেকে কিছু জানানো না হলে নাগরিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নেমে পড়েন। গত সোমবার, হোয়াইট হাউস এ ব্যাপারে চীনের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে।
মুসলিম উইঘুরদের বাসস্থান উত্তর-পশ্চিম চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে লক ডাউন চলাকালীন সময়ে এক বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের নিহত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসলে বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে চীনের রাজধানী বেইজিং, অর্থনৈতিক কেন্দ্র সাংহাই, পূর্বাঞ্চলীয় শহর হ্যাংজু, দক্ষিণের শহর গুয়াংঝো, উহান এবং চেংডু, মধ্য শহর লানঝো, নানজিং এবং সুদূর পশ্চিমের শহর কোরলাতে।
এ ব্যাপারে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জন কিরবি জানান, “লকডাউন এমন কোনও নীতি নয়, যা আমরা সমর্থন করছি। কিন্তু প্রশাসনও খুব ভেবেচিন্তেই লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে, এটা জেনেও যে এই কারণে দেশের সমস্ত স্কুল, কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে এবং নাগরিকদের ঘরবন্দী জীবন কাটাতে হবে।
তবে মানুষদের এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে আমরা সমর্থন জানাচ্ছি। অবশ্যই প্রশাসনের কোনও সিদ্ধান্ত নাগরিকদের পছন্দ না হলে তারা শান্তিপূর্ণভাবে এর প্রতিবাদ জানাতে পারে৷ এই অধিকার তাদের রয়েছে।”
ক্যাপিটল হিলে, মার্কিন আইন প্রণেতারা চীনা সরকারের বিরুদ্ধে নাগরিকদের অভিযোগ তুলে ধরেন।
ভার্জিনিয়ার ডেমোক্র্যাট সেন মার্ক ওয়ার্নার বলেন, “চীনা জনগণ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কঠোর আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। তারা শুধু কঠোর কোভিড নীতি নিয়েই নয়, বরং সেন্সরশিপ নিয়েও চিন্তিত। আমি মনে করি চীনা জনগণ তাদের নিজেদের দেশে আরো স্বাধীনতা ও কম সমালোচনা চাচ্ছে। আমি তাদের পাশে আছি।”
রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা চীনা বিক্ষোভকারীদের জন্য হোয়াইট হাউসের প্রকাশ্য সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন।
টেক্সাসের রিপাবলিকান সেন টেড ক্রুজ বলেছেন, “বাইডেন প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশার চেয়ে খারাপ হয়েছে। সিসিপির জানা উচিত যে, কোনো না কোনো উপায়ে, আগামী মাসে কিংবা আগামী বছরগুলিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার জন্য প্রতিটি সিসিপি কর্মকর্তাকে দায়ী করবে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুখপাত্র জানান, “চীন কঠোর শূন্য কোভিড নীতি অনুসরণের মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের মাঝে আরো বিক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমরা কোভিড নিয়ন্ত্রণে জনস্বাস্থ্যের উপর গুরুত্বারোপ করেছি। আমরা প্রত্যেক নাগরিককে টিকা প্রদান ও পরীক্ষা ও চিকিৎসা সহজলভ্য করার দিকে মনোযোগ দিয়েছি।”
কিরবি জানান, চীন কখনোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেনি।
তবে জিনজিয়াং প্রদেশে অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারটি কোভিড-১৯ কিংবা লকডাউনের সাথে সম্পর্কিত নয় বলে জানান চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র, ঝাও লিজিয়ান। তিনি অবশ্য কবে নাগাদ সরকারের এ শূন্য কোভিড নীতি শেষ হবে সে বিষয়ে মুখ খুলেননি।