জেলা পরিক্রমাসর্বশেষ

ট্রলারডুবি: ১৪ ঘণ্টায়ও সন্ধান মেলেনি ২ স্কুলশিক্ষকের

ফরিদপুর সদরের তাইজউদ্দীন মুন্সীর ডাঙ্গী এলাকায় ১৪ জন স্কুলশিক্ষক নিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ দুজনের সন্ধান এখনও মেলেনি।
বুধবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় পৌনে ৬টার দিকে নিখোঁজ হলেও বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সকাল পৌনে ৮টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র কর্মকর্তা সুভাষ বাড়ৈ।
তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়া রাত ১২টার পর উদ্ধার অভিযান বন্ধ ছিল। আজ সকাল ৭টা থেকে আবারও অভিযান শুরু হয়।
নিখোঁজ ওই দুই শিক্ষক হলেন- ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেন (৪০) ও সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক আজমল হোসেন শেখ (৪২)। এদের মধ্যে আজমল হোসেনের বাড়ি সদর উপজেলার খলিলপুরে। তবে তিনি শহরের গোয়ালচামটে ভাড়া থাকেন। আলমগীর হোসেনের বাড়ি খলিল মন্ডলের হাট এলাকায়। তিনি ঝিলটুলি পুরাতন পাসপোর্ট অফিস এলাকায় থাকেন।
এ ট্রলার দুর্ঘটনায় আহত ফরিদপুরের চর মাধবদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ক সহকারী শিক্ষক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস (৪২) ও সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসায়ী শিক্ষা শাখার শিক্ষক বলাই কুমার দাসকে (৪১) ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও দুই শিক্ষক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ট্রলার ডুবি থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষক রেজাউল করিম জানান, তিনি নিজেসহ শহরের শোভারামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সালাউদ্দিন, সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইদুর প্রামানিক, আইয়ুব, জাহাঙ্গীর, আবুল হাসান, সাইফুল ইসলাম, আজমল হোসেন, শোভারামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাঈদ, ঈশান ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক শাহিন, সাদীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুশান্ত, বলাই, ফরিদপুর হাই স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক আলমগীর হোসেন ও আজাদ বিকেলে ভ্রমণে বের হন।
তিনি আরও জানান, স্রোতের কারণে হঠাৎ করে ট্রলারটি উল্টে যায়। আর কিছু মনে নেই। পরে জ্ঞান ফিরে দেখেন নদীর পাড়ে লোকজন ঘিরে ধরে আছে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী আসলাম শেখ বলেন, আমরা সিঅ্যান্ডবি ঘাটে জাহাজে রঙ করছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে এগিয়ে এসে দেখি ট্রলার ডুবে গেছে। আমরা সবাই মিলে কয়েকজনকে উদ্ধার করি।
নাজমুল হোসেন নামের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি নদীতে নৌকা চালাচ্ছিলাম। ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর খোঁজাখুঁজি শুরু করি। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে দুজনকে উদ্ধার করি।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সকালে ফরিদপুর ২ নম্বর ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রাকিব হোসেন জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। ১৪ জন শিক্ষক এবং মাঝিসহ ট্রলার ডুবে যায়। ১৩ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও দুজন শিক্ষককে এখনও উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, নিখোঁজ দুই শিক্ষককে উদ্ধারে নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ ও দমকল বাহিনীর কয়েকটি দল কাজ করছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডুবুরি দল নতুন করে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে।
ফরিদপুর শহর থেকে বিকেল ৩টায় ট্রলার ভাড়া করে পদ্মায় ভ্রমণে যান বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৪ জন শিক্ষক। সন্ধ্যায় ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে তীব্র স্রোতের মুখে ৩ নম্বর পন্টুনের সঙ্গে সংঘর্ষে শিক্ষকদের বহন করা ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ট্রলারচালকসহ ১২ জন শিক্ষক সাঁতারে পাড়ে উঠতে পারলেও দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।

/জেড এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *