ডিজিটাল ‘স্যাট’ পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়া হবে আরো সহজ
ডেস্ক রিপোর্ট, সুখবর ডটকম: ২০২৩ সালের মার্চ মাসের দিকে ‘স্যাট’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে সম্পূর্ণ ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা যুক্ত হচ্ছে। যদিও পূর্বের কাগজে-কলমের কিছু প্রক্রিয়া এখনো থাকবে, তবে ছাত্রবান্ধব কিছু পরিবর্তন আসতে চলেছে।
ইয়েল ইউনিভার্সিটির স্নাতক ভর্তি ও আর্থিক সহায়তা বিষয়ক ডিন, জেরেমিয়া কুইনলানের মতে এটি সমস্ত ছাত্র, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের আবেদনকারীদের জন্য একটি নতুন জয়। তার মতে এ নতুন প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা পরিচালনা আরো সহজ হবে। তাছাড়া ব্যক্তিগত তথ্য এবং সবকিছুর নিরাপত্তাও বাড়বে।
৩০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী স্যাট পাইলট বা গবেষণা ক্ষেত্রে অংশ নিয়েছে। তাদের মধ্যে ৮০% এমন শিক্ষার্থী যাদের পূর্ববর্তী পদ্ধতিতে পরীক্ষার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা জানিয়েছেন যে এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরীক্ষা দেওয়াটা অধিক সুবিধার।
মুম্বাইয়ের দ্য ক্যাথেড্রাল এবং জন কনন স্কুলের ডিজিটাল স্যাট পাইলট পরীক্ষা কেন্দ্র সমন্বয়কারী, সুদর্শনা শুক্লা বলেছেন যে এই নতুন ডিজিটাল পদ্ধতিটি শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও পরীক্ষা সমন্বয়কারীদের জন্য অনুকূল অভিজ্ঞতা তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে এই নতুন ডিজিটাল স্যাট সম্পর্কে সাতটি জিনিস জানা আবশ্যক।
১. পরীক্ষার সময় তিন ঘন্টার পরিবর্তে দুই ঘন্টা হবে।
এক্ষেত্রে এই ডিজিটাল পদ্ধতি পূর্বের কাগজে-কলমে পদ্ধতি থেকে এক ঘন্টা সময় বাঁচাবে। পুরো পরীক্ষা শেষ হতে মোট সময় লাগবে ২ ঘন্টা ১৪ মিনিট (১০ মিনিটের বিরতি থাকবে)
নয়া দিল্লির ব্রিটিশ স্কুলের ছাত্র, আইদান বিমব্রাহের মতে, এপ ডাউনলোড থেকে ডিভাইস সেট আপ পর্যন্ত কোন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় না। যার জন্য শিক্ষার্থীরা কম চাপের মধ্যে থাকবে।
২. মৌখিক ও গণিতের পরিসর স্বল্প করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীর ক্লান্তি কমাতে রিডিং এর ক্ষেত্রে ছোট অনুচ্ছেদ দেওয়া থাকবে, যেখান থেকে বড় প্রশ্ন করা হবে। ঠিক তেমনিভাবে গণিত বিভাগেও সহজ প্রশ্ন করা হবে।
জয়পুরের জয়শ্রী পেরিওয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পাইলট অংশগ্রহণকারী এক ছাত্র দিব্যাংশ লালওয়ানি জানায় যে, সফটওয়্যারের মধ্যে কোন ধরনের বাফারিং জনিত সমস্যা ছিল না। ফলে সে দ্রুত প্রশ্নের সমাধান করতে সক্ষম হয়।
৩. পরীক্ষা দেওয়ার আরো সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য বার্ষিক পাঁচটির পরিবর্তে সাতটি সুযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে ছাত্ররা আরো বেশি অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের পছন্দমতো ক্ষেত্র নির্বাচন করতে পারবে এবং কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে পারবে।
৪. ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনায় মনোযোগ ধরে রাখার জন্য ব্লুবুক, কলেজ বোর্ডের ডিজিটাল অ্যাপে টুল তৈরি করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা টাইমার থেকে পরীক্ষায় আর কতোটা সময় বাকি আছে তা দেখতে সক্ষম হবে। যে প্রশ্নগুলোর জন্য অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন সেগুলোকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হবে।
৫. সমগ্র গণিত বিভাগে ক্যালকুলেটর অনুমোদিত থাকবে।
এক্ষেত্রে অ্যাপের মধ্যেই ক্যালকুলেটর যুক্ত থাকবে নয়ত শিক্ষার্থীরা নিজস্ব ক্যালকুলেটরও আনতে পারবে।
৬. মূল পরীক্ষার আগে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কিছু অনুশীলন পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
এসব অনুশীলন পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজেই বুঝতে পারবে মূল পরীক্ষাটি ঠিক কেমন হতে পারে। মূল পরীক্ষার বিষয়বস্তু সম্পর্কে তারা জানতে পারবে। তাছাড়াও সময় ও উত্তর করার গতি ইত্যাদি বিষয়েও তাদের ধারণা হবে। তাদের ভীতিও দূর হবে। সর্বোপরি পরীক্ষার আগেই পরীক্ষা সম্পর্কে তাদের একটি অভিজ্ঞতা হয়ে যাবে।
৭. ছাত্ররা যে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে, সে প্রযুক্তিই ব্যবহার করতে পারবে।
ডিজিটাল স্যাট পরীক্ষা দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা নিজস্ব ট্যাব, ল্যাপটপ বা স্কুল থেকে ইস্যু করা ডিভাইস ব্যবহার করতে পারে।