লাইফস্টাইল

তরমুজের খোসার গুণ জানলে আর কখনই ফেলে দেবেন না এটা

লাইফস্টাইল ডেস্ক, সুখবর বাংলা: তরমুজের খোসা ফেলে দেওয়া মানে শুধু খাদ্যের অপচয়ই নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারি জিনিসও চলে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, তরমুজ এমন একটি ফল যার খোসার রয়েছে অসাধারণ স্বাস্থ্যকর কিছু গুণ। আপনিও যদি তরমুজ খাওয়ার পরে খোসা ফেলে দেন তবে একবার অন্তত প্রতিবেদনটি পড়ে নিন। এই ফলের খোসায় এমন কিছু গুণ রয়েছে যা জানলে আর কখনই ফেলবেন না।

চৈত্রের বাজারে ছেয়ে গিয়েছে তরমুজ। এই সময়ের জনপ্রিয় এই ফল। কেবল খেতে ভালোই নয়, শরীরকে হাইড্রেটেট রেখে সতেজ রাখতে সহায়তা করে এই ফল। তরমুজের মধ্যে ৯২ শতাংশ জল থাকে। এতে ভিটামিন-এ এবং সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তরমুজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল এর গোলাপি অংশটি।

তরমুজের মোট ওজনের প্রায় অর্ধেক এবং বাকি অর্ধেক খোসা। আমরা সাধারণত তরমুজের লাল অংশটুকুই খেয়ে থাকি।একটি দশ কেজি ওজনের তরমুজের পাঁচ কেজিই খোসা যেগুলি আমরা ফেলে দিই! বেশির ভাগ সময়ই মানুষ ফল খেয়ে খোসা ফেলে দেয়। আপনিও যদি তরমুজ খাওয়ার পর এর খোসা ফেলে দেন, তাহলে আজই এর গুণগুলো জেনে নিন। আজ তরমুজের খোয়ার খোসার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানুন।

এটি আপনার ওয়ার্কআউট বুস্ট করতে পারে

এর খোসায় রয়েছে সিট্রুলাইন। যা আপনাকে কাজ করার জন্য প্রচুর শক্তি দেয়। সিট্রুলাইন রক্তনালীগুলির প্রসারণকে করতে সাহায্য করে । একটি সমীক্ষা অনুসারে, সিট্রুলাইন পরিপূরকগুলি পেশীগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ করে, যা আপনাকে অনুশীলনে ভাোল পারফর্ম করতে সাহায্য করে। আসলে তরমুজের খোসায় রয়েছে সিট্রুলিন, যা ফ্রি রেডিকেল দূর করতে ভালো কাজ করে। এটা এমিনো এসিডে পরিবর্তিত হয়। যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। হার্টের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করে এবং শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন দূর করুন

গবেষণা দেখা গিয়েছে, তরমুজের খোসায় লিবিডো-বর্ধক শক্তি অ্যামিনো অ্যাসিড সিট্রুলাইন রয়েছে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ভায়াগ্রার সঙ্গে যুক্ত অনেক সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই এল-সিট্রুলাইন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা ইরেকশন উন্নত করতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করে

যদি আপনার চিকিৎসক আপনাকে রক্তচাপ কমানোর নির্দেশ দেন, তাহলে তরমুজ এবং এর সঙ্গে এর খোসা খাওয়ার চেষ্টা করুন। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, তরমুজের নির্যাস সম্পূরকগুলি স্থূল ব্যক্তিদের তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে সক্ষম। আপনি যদি তাজা ফলের খোসা খেতে না পারেন তবে ডায়েটে সিট্রলাইনের পরিপূরক অন্তর্ভুক্ত করুন।

ফাইবার সমৃদ্ধ

তরমুজের খোসার আরেকটি সুবিধা হল এটি ফাইবারের উৎস। ফাইবার নিয়মিত মলত্যাগ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতেও সাহায্য করতে পারে। আপনার ফাইবারের মাত্রা বাড়াতে তরমুজের খোসা খেতে ভুলবেন না।

ওজন কমাতে পারে

তরমুজের খোসায় জলের পরিমাণ বেশি থাকায় শরীরকে ডিহাইড্রেট হতে দেয় না। যার ফলে আমাদের শরীর সতেজ থাকার পাশাপাশি খাদ্য দ্রুত হজমেও সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তরমুজের খোসায় ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে দারুণ সহায়ক। কারণ, এতে ফাইবার থাকায় খাদ্য বিপাকক্রিয়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে আর্জিনাইন নামের বিশেষ রকমের অ্যানিনো অ্যাসিড পাওয়া যায় যা দ্রুত ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত সিট্রুলিন সমৃদ্ধ খাবার খায় তারা বাড়তি ওজন কমাতে পারে এর সাহায্যে। তবে, তরমুজের খোসা খাওয়ার ক্ষেত্রে একেবারে বাইরের সবুজ অংশ সেটা খাবেন না। এটা পেটে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তরমুজে লালের পরে যে সাদা অংশ সেটি-সহ খান। এছাড়া এই সাদা খোসার জুস করেও খেতে পারেন।

যেভাবে খাবেন ?

এটি রান্না করেও যেমন খাওয়া যেতে পারে। তেমনি কাঁচা অবস্থায় সালাদ বা জুস হিসেবে খাওয়া যায়। তরমুজের খোসা দিয়ে আঁচার ও হালুয়াও তৈরি করা যায়।

তরমুজের খোসা লাউয়ের মতো ছোট ছোট টুকরো করে ডাল, টমেটোর সঙ্গে রান্না করে খেতে পারেন। খেতে অনেকটা চাল কুমড়োর মতো লাগবে। তবে রান্নার চেয়ে কাঁচা খেতে পারলে বেশি উপকারী।

আরো পড়ুন:

ইফতারে রাখুন মৌসুমি ফলের শরবত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *