ধর্ম ও জীবনভিনদেশসর্বশেষ খবর

রহস্যময় জিনের পাহাড়!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, সুখবর ডটকম: মদিনা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি উপত্যকার নাম ওয়াদি-ই-জিন। শহরের উত্তর-পশ্চিম দিকে জায়গাটি নিয়ে একটি রহস্য আছে, যা সারা বিশ্ব থেকে আসা মানুষকে আকৃষ্ট এবং মুগ্ধ করে। সৌদি আরবের পবিত্র ভূমিতে, এই জায়গাটিতে অনেক ভ্রমণকারী এবং পর্যটকদের প্রতি সপ্তাহে তাবু গেড়ে থাকতে দেখা যায়। এই উপত্যকার সবচেয়ে বড় রহস্য হলো ড্রাইভার স্টিয়ারিং স্পর্শ না করলেও গাড়ি এবং যানবাহনগুলো নিজ থেকেই ঢালের উল্টোদিক চলে যায়। আবার রাস্তায় পানি ঢেলে দিলে তা যায় স্রোতের বিপরীতে।

স্থানীয়দের ধারণা জিনরা সেখানে উপস্থিত আছে, আবার কেউ কেউ বলেন ম্যাগেনেটিক ফিল্ডের কারণে এরকম হতে পারে। উপত্যকাটি তিন দিকে পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত এবং এটি একটি ডিমের মতো আকৃতির। ওয়াদি-ই-জিনের  ইতিহাস ইসলামের প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থগুলিতে রয়েছে যা উপত্যকায় জিনের অস্তিত্ব প্রমাণ করে। কুরআনে প্রায় ২৯ বার জিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

স্থানীয় চালকদের বললেও অনেকসময় নিয়ে যেতে চায় না জীনের পাহাড় নামে খ্যাত এই জায়গায়। গেলেও যাত্রীদের নামার সুযোগ দেয় না। এই পাহাড়ের পিচ করা সড়কটি ঢালু। এই ঢালু সড়কে যদি একটি পানির বোতল রেখে দেওয়া হয় সেটি ঢালুর দিকে না গিয়ে বিপরীত দিকে যাবে। এমনকি পানি ঢাললেও একই দৃশ্য দেখা যাবে। এই ঢালুতে যদি গাড়ির গিয়ার নিউট্রালে রেখে দেওয়া হয় তাহলে সেটিও উল্টো দিক যাবে।

ওয়াদি আল জিন পাহাড় সম্পর্কে মানুষের প্রথম ধারণা আসে ২০০৯ সালের দিকে। সৌদি সরকার এখানে একটি সড়ক তৈরির পরিকল্পনা করে ছিল। যথাসময়ে কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু সমস্যা দাঁড়াচ্ছিল রাস্তা নির্মাণের জন্য রাখা যন্ত্র ও পিচ ঢালাই করার বড় বড় রোলার গাড়িগুলো আস্তে আস্তে ওপরের দিকে উঠে যাচ্ছিল। একটা সময় গাড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মদিনা শহরের দিকে এগোতে থাকে, সুবাহান আল্লাহ।

এ দেখে শ্রমিকরা প্রচণ্ড ভয় পেয়ে নির্মাণ কাজ ছেড়ে পালিয়ে যায়। ফলে সড়কটি মাত্র ৩৫-৪০ কিমি. কাজ হওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় ও অদ্ভুত পথ হল এ ওয়াদি-আল জিন পাহাড়ের বুক চিরে যাওয়া সড়কটি। সৌদি সরকার বেশ কিছুকাল জনসাধারণের যাতায়াত নিষিদ্ধ রাখার পর কয়েক বছর মাত্র সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের প্রবেশের অনুমতি দেয়।

সৌদিয়ানদের কাছে এ জিন পাহাড় নিয়ে নানা প্রবাদ চালু রয়েছে। এখানে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ রাখলেও ১২০ কিলোমিটার গতিবেগে গাড়ি ছুটে যায়। ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাকে ‘রিভার্স গ্র্যাভিটি’ বলে থাকেন। এটি একটি প্রাকৃতিক ঘটনা যা পাথুরে পর্বতমালায় ঘটে। ওয়াদি ই জিন বৈজ্ঞানিক কারণ অনুসারে উচ্চ চৌম্বকীয় শক্তি রয়েছে যা গাড়ি এবং চাকাগুলিকে আকর্ষণ করে চলাচলে সাহায্য করে। এখন পর্যন্ত এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা না মিললেও রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

এম এইচ/

আরও পড়ুন:

হিজাব আইন পর্যালোচনা করছে ইরানের সংসদ ও বিচার বিভাগ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *