ধর্ম ও জীবনসর্বশেষ খবর

স্বাবলম্বী হওয়ার তাগিদ ও পরামর্শ দিয়েছেন রসুল (সা.)

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক, সুখবর ডটকম: রসুলে পাক (সা.) অনুসারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন। অপরের কাছে হাত পাতাকে তিনি নিরুৎসাহিত করেছেন। ভিক্ষার হাতকে কাজের হাতে পরিণত করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

আনাস (রা.) বলেন যে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিন ব্যক্তি ছাড়া আর কারও হাতপাতা (ভিক্ষা চাওয়া) জায়েজ নয়। যথাঃ-

(১) সর্বনাশা অভাবে পতিত ব্যক্তি,

(২) ঋণে জর্জরিত ব্যক্তি এবং

(৩) পীড়াদায়ক রক্তপণে (দিয়াত) দায়বদ্ধ ব্যক্তি।

(আবু দাউদ থেকে মিশকাতে)

উল্লেখ্য, আনসার সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করেন। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার ঘরে কি কিছুই নেই? সে বলল, একটি দামি কম্বল আছে, যার একাংশ আমার গায়ে দেই, অপর অংশ বিছিয়ে থাকি এবং একটি কাঠের পেয়ালা আছে যাতে আমরা পানি পান করি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দুটি জিনিসই আমার কাছে নিয়ে আস। সে তা নিয়ে এলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কম্বল ও পেয়ালা হাতে নিয়ে বললেন, এ দুটি জিনিস খরিদ করতে তোমরা কি কেউ প্রস্তুত আছ? এক ব্যক্তি বলল, আমি এক দিরহামে ক্রয় করতে রাজি আছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই অথবা তিনবার বললেন, কে এক দিরহামের বেশি দিতে পারে? এক ব্যক্তি উঠে বলল, আমি দুই দিরহাম দিতে রাজি আছি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিনিস দুটি তাকে দিয়ে দিরহাম দুটি গ্রহণ করলেন। তিনি তা আনসার ব্যক্তির হাতে দিয়ে বললেন, যাও এক দিরহাম দিয়ে খাদ্য ক্রয় কর এবং নিজের পরিবার-পরিজনকে খাওয়াও। আর অপরটি দিয়ে একটি কুঠার কিনে তা আমার কাছে নিয়ে আস।

কথামতো আনসার ব্যক্তিটি কুঠার কিনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে এলো। তিনি নিজ হাতে তাতে কাঠের হাতল লাগিয়ে দিয়ে বললেন, যাও কাঠ কাটতে থাক এবং তা বিক্রি করতে থাক। লোকটি চলে গেল এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথামতো কাঠ কেটে বিক্রি করতে লাগল। পনেরো দিন পর সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হলো। তখন সে দশ দিরহামের মালিক। সে তার কিছু দিয়ে কাপড়-চোপড় কিনল এবং কিছু দিয়ে খাদ্যদ্রব্য কিনল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, (শ্রমের মাধ্যমে উপার্জন) তোমার জন্য অন্যের কাছে সাহায্য চাওয়া অপেক্ষা অধিক উত্তম। কারণ ভিক্ষাবৃত্তির লাঞ্ছনাকর চিহ্ন কিয়ামতের দিন চেহারার ওপর দাগস্বরূপ হবে। ‘সর্বনাশা অভাব’ মূলে ‘মুদকিইন’ শব্দ রয়েছে। অর্থাৎ অভাবীকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার মতো তীব্র অভাব। উল্লিখিত ঘটনাটি সুনামে আবু দাউদ (১৬৪১ নম্বর হাদিস), মুসনাদে আহ্মাদ (১২১৫৮) ও ইবনে মাজা (নম্বর ২১৯৮) গ্রন্থেও উল্লেখ আছে।

রসুল (সা.) জীবিকার জন্য নিজেও কঠোর পরিশ্রম করেছেন। মুমিনরা যাতে পরনির্ভর না হয় সে জন্য তাদেরও হালাল পথে উপার্জনের পরামর্শ দিয়েছেন। আমাদের সবারই উচিত তাঁর আদর্শকে অনুসরণ করা।

এম এইচ/

আরও পড়ুন:

মুসলিম নারীর পবিত্রতা বিষয়ক আট বিধান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *