৬০ দিনের মধ্যে হাতিরঝিলের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পকে পাবলিক ট্রাস্ট ঘোষণা করে প্রকল্প এলাকার হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকানসহ সব ধরনের ব্যবসায়িক-বাণিজ্যিক স্থাপনা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে এসব স্থাপনা আপসারণের নির্দেশ দিয়ে রায়ে বলা হয়েছে, “তুরাগ নদীর রায়ের নীতি অনুসারে ঢাকার হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টকে পাবলিক ট্রাস্ট (জনসম্পত্তি) ঘোষণা করা হলো।”
এ সংক্রান্ত রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেয়।
আদালত বলেছেন, “হাতিরঝিল প্রকল্পে হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকানসহ সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা অবৈধ ঘোষণা করা হলো। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সকল বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে।”
প্রকল্প এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রকল্পের সংরক্ষণ, উন্নয়ন, পরিচালনার জন্য একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করে তা প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করা ছাড়াও প্রকল্পের স্থায়ী পরামর্শক হিসেবে বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগ ও সেনাবাহিনীর ২৪তম ব্রিগেডকে যৌথভাবে পরামর্শক নিয়োগ করা হল।
প্রকল্প এলাকায় জনসাধারণের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড শৌচাগার নির্মাণ এবং প্রকল্প এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সাইকেলের জন্য আলাদা লেইন করতে হবে।
এছাড়া প্রকল্প এলাকার লেকে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে হবে এবং সেখানে বাণিজ্যিক কোনো স্থাপনা তৈরি করা যাবে না।
বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে প্রকল্পের নামকরণ করার পরামর্শ দিয়ে রায়ে বলা হয়, “হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকা হলো ঢাকার ফুসফুস। যে কারণে এর সুরক্ষা অপরিহার্য।”
রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, হাইকোর্ট এই রায় চলমান (কন্টিনিউয়াস মেন্ডামাস) রেখেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী। আর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইমাম হাছান। রাজউকের আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেছেন, রায়ের অনুলিপি পেলে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে তারা আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
হাতিরঝিলের মূল পরিকল্পনার বাইরে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠে। এ বিষয়ে ২০১৮ সালের ১ অগাস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করা হয়। রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্প এলাকায় মূল পরিকল্পনার বাইরে থাকা সব স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ চাওয়া হয় রিটে।