ফ্যাশনলাইফস্টাইলসর্বশেষ খবর

শীতের পোশাকে এবার নতুন ট্রেন্ড

লাইফস্টাইল ডেস্ক, সুখবর ডটকম: শীতের পোশাকে চাদর শালের পাশাপাশি জ্যাকেট, কোট, ব্লেজার, হুডিরও চাহিদা বাড়ছে। দেশীয় ফেব্রিকসে এসব পোশাক তৈরি হচ্ছে। নতুন ধরনের এসব পোশাকে ফ্যাশন ট্রেন্ডে শীতের পোশাকে বড়সড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এ বছর হালকা শীতের পোশাক প্রাধান্য পেয়েছে। একটা সময় দেশীয় ফ্যাশন হাউজে শীতের পোশাক বলতে নানা ধরনের চাদর ও শালেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু বছর-কয়েক ধরে দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলো নানা ধরনের শীতের পোশাক নিয়ে এসেছে।

শুরুতে ডিজাইনাররা দেশীয় ফেব্রিকসে চাদর, পঞ্চ, ক্রেপ, হাফ হাতা কটি ও নিট এবং গ্যাবার্ডিনের হুডি এনেছিল। কিন্তু এখন শীত-পোশাকের বড় জায়গাজুড়ে আছে ডেনিম। ডেনিমের কুর্তি থেকে চাদর সবই হচ্ছে। দামটাও যেহেতু হাতের নাগালে আর পরতেও আরামদায়ক তাই শীতজুড়ে ডেনিমের শীতের পোশাক পছন্দের শীর্ষে। ডেনিমের পাশাপাশি দেশীয় ফেব্রিকস হিসেবে খাদি জায়গা করে নিয়েছে। আরও আছে ফ্লানেল ও নিট ফেব্রিকস।

শীতের অনুভুতি কম হওয়ার কারনে পোশাকেরও পরিবর্তন হচ্ছে। উলেন পোশাকের চাহিদা কমছে। যোগ হয়েছে খাদি, ডেনিম ও ফ্লানেল। দেশীয় শীতের পোশাকের বড় অংশজুড়ে আছে খাদি। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নানা ধরনের নিরীক্ষাও হচ্ছে খাদিতে। খাদির অমসৃণ থেকে মসৃণ হচ্ছে টেক্সচার। মোটিফ, প্যাটার্ন ও রং সবকিছুতেই ঐতিহ্যের ছোঁয়া। আটপৌরে সাজ থেকে পার্টি সবখানেই মানিয়ে যায় খাদির পোশাক। খাদির শীতের পোশাকে প্রতি বছর ফ্যাশন হাউজগুলোতে নতুন কাট এবং লুকের পোশাক দেখা যায়।

খাদি দিয়ে শীতের পোশাক তৈরি করতে যদি ট্রেন্ড ফলো করা যায় তাহলে বাজারে সেগুলোর চাহিদা থাকবে। শীতে খাদি কাপড় দিয়ে নানা ধরনের পোশাক তৈরি করছেন ডিজাইনাররা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শীতের সময় হাতে বুনা মোটা খাদি কাপড়ের ব্যবহার অনায়াসে করা যেতে পারে। রূপান্তরিত খাদিও দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। খাদি নিয়ে হচ্ছে নানা রকম নিরীক্ষা। পোশাকের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জ্যাকেট, কোট, ব্লেজার, হুডি, পঞ্চ ও ক্রেপ। দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোতে এ ধরনের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে।

বিদেশি কাপড়ের আধিপত্য আমাদের পোশাকবাজারে আছে। আমাদের দেশের পাওয়ার লুমের কাপড় উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাত পর্যন্ত নানা পর্যায়ে রাসায়নিকের ব্যবহারের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। তা ছাড়া এ ধরনের ফেব্রিকস যেমন টেকসই হয় না, তেমনি পরিবেশবান্ধবও না।

খাদি পরিবেশবান্ধব কাপড়। খাদিকে বলা হচ্ছে ‘ফিউচার ফেব্রিকস’। চরকায় যে খাদি হয় সেই সুতা কিছুটা মোটা কিন্তু এখন ১৫০ কাউন্টের সুতা দিয়ে খাদি কাপড় বোনা হয়, যা বেশ নিখুঁত। এই বোনা খাদি দিয়েই সব ধরনের পোশাক বানানো যায়। তা ছাড়া ডাই করে খাদির জমিনে আনা হয় নতুনত্ব। সাদা রঙের খাদিতে ভেজিটেবল, কেমিক্যালসহ নানা রঙের ডায়িং হচ্ছে।

যেকোনো রঙের খাদির পোশাক এখন সহজেই পাওয়া যায়। আবার মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল সুতার সঙ্গেও খাদি সুতা ব্যবহার করে কাপড় বোনা হচ্ছে। আগে শুধু কুমিল্লা ও চান্দিনায় খাদি হলেও বদলে গেছে সেই ধারা। খাদি সুতা দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের তাঁতিরা বিভিন্নভাবে বুননে ব্যবহার করছেন। খাদিতে ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট, টাইডাই নানা মাধ্যমে খাদি কাপড়ের পণ্যও পাবেন।

শীতের পোশাকে উষ্ণতার পাশাপাশি অভিজাত ও স্টাইলিশ লুক থাকতে হবে। মেয়েদের ভিন্ন স্টাইলের ব্লেজার, ওপেন ফ্রন্ট ওভার কোট, জ্যাকেট, রিভারসেবল জ্যাকেট, ফুল লেংথ কটি, যা মিলিয়ে পরতে পারেন জিনস বা নানা স্টাইলের প্যান্টের সঙ্গে। রঙেও আছে বৈচিত্র্য। নেভি-ব্লু, সবুজ, গাঢ় নীল, বাদামি ও কমলা রঙের শীতের পোশাক পাবেন। এ ছাড়া মিক্সড চেকেরও পোশাক আছে। ফেব্রিকস হিসেবে ওভেনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ডিজাইনে বিশেষত্ব হলো ফ্রন্ট কলার, প্যান কলার, ফোল্ড কলার, বোতামে বিশেষত্ব আছে। এ ছাড়া দুই পাশে পকেট দিয়ে নতুনত্ব আনা হয়েছে।

এবার শীতের পোশাকে মূলত ক্যাজুয়াল ওয়্যার প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। উইন্টার কালেকশনে মেয়ে ও শিশুদের পঞ্চ, মেয়েদের জ্যাকেট, হুডি, টপস, তাঁতের শাল পরিধান করতে পারেন। ফেব্রিকসের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে কটন ডেনিম। শিশুদের পোশাকে বিভিন্ন টেকচারের নিট ফেব্রিকসের ব্যবহার করতে পারেন।

কোথায় পাবেন ও দরদাম

ফ্যাশনেবল শীতের পোশাক পেতে পারেন দেশাল, কে-ক্র্যাফট, বিশ্বরঙ, সারা, রঙ বাংলাদেশ, সেইলর, ইয়েলো, লা রিভ, ইজিসহ বিভিন্ন দেশীয় ফ্যাশন হাউজে। এ ছাড়া নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, আজিজ সুপার মার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা, মৌচাক মার্কেট, বঙ্গবাজার, গুলিস্তান মার্কেট, বায়তুল মোকাররম মার্কেটসহ বেশ কিছু মার্কেটে তুলনামূলক কম দামে পেতে পারেন শীতের পোশাক। জ্যাকেটের ডিজাইন, কাপড়ের মান ও ব্র্যান্ডভেদে জ্যাকেটের দামের পার্থক্য রয়েছে। হাজার টাকা থেকে জ্যাকেটের দাম শুরু হয়েছে। দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোয় পাবেন খাদির গজ কাপড়। প্রতি গজ ৮০ থেকে ২০০ টাকা, জ্যাকেট, পঞ্চ পাবেন ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা। কে-ক্র্যাফটের জ্যাকেট, কোট, ব্লেজারের দাম ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে। দেশালে শিশুদের জন্য শীতের কালেকশনে ৩৫০ থেকে ৭৫০ টাকা আর বড়দের পোশাকগুলো পাওয়া যাবে ৭০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে।

এম এইচ/ আইকেজে

আরও পড়ুন:

জামাকাপড় দীর্ঘদিন নতুনের মতো রাখার টিপস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *